বাবুরাইল খালটি নারায়ণগঞ্জ নগরীর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ধলেশ্বরী পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার বিস্তৃত একটি সংযোগ খাল। অতীতে বাবুরাইল খালের মাধ্যমে পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী নৌকা/ট্রলার মন্ডলপাড়া, বৌবাজার ও জিমখানা ঘাটে অবস্থান করত। এ খালটি স্থানীয় লোকজনের দৈনন্দিন গোসল, সাঁতার কাটা, মাছ ধরাসহ বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের স্থান ছিল। এছাড়াও তৎকালীন সময়ে খালের পানি দিয়ে গৃহস্থালী কাজকর্ম সম্পন্ন করা হত। মানুষের দৈনন্দিন পানির চাহিদা পূরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করত ঐতিহাসিক বাবুরাইল খাল। পরবর্তীতে নব্বই দশকের পর অবৈধ দখল, দূষণ ও নদীর নাব্যতা হ্রাসের ফলে বাবুরাইল খালটি বদ্ধ জলাশয়ের আকার ধারণ করে। প্রতিনিয়ত মানুষের বর্জ্য ফেলার কারণে খালটি ডাম্পিং স্থানসহ মশা মাছির প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এই খালটি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০১৪-১৫ সালে “নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বাবুরাইল খাল পুনরুদ্ধারসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও শোভাবর্ধন ও আলোকিতকরণ (শীতলক্ষ্যা নদী হতে ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত)” প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বিশ্ব ব্যাংক এর নিকট প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ২০১৮ সালে দরপত্র আহবান করা হয়। প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্তমানে প্রকল্পটির উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের প্রায় ৮৫% কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ২.০৫ কি:মি: রাস্তা, ৫.৫০ কি:মি: আরসিসি ড্রেন, ফুটপাথ (প্রস্থ ৬.৫ হতে ১০ ফুট পর্যন্ত), ১০টি আরসিসি গার্ডার ও স্লাব ব্রীজ, ৫টি মেটাল ফুট ব্রীজ, ৩টি আরসিসি ভিউইং ডেক, ১টি আরসিসি ঘাটলা ও ১টি পাবলিক টয়লেট এবং ফুটপাতে ষ্ট্রীট লাইট অন্তর্ভুক্ত আছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপন করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কৃষ্ণচূড়া, কাঠবাদাম, কাঞ্চন, জারুল, জাম, বকুল, হিজল ইত্যাদি।
প্রকল্পটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হলে নগরীর পরিবেশ উন্নয়নসহ নগরবাসীর দীর্ঘদিনের গণপরিসরের চাহিদা পূরণ হবে। এছাড়া খালটি অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি ধারণের জন্য সংরক্ষিত জলাধার (রিটেনশন পুকুর) হিসেবে কাজ করবে। অপরদিকে অগ্নিকান্ড নির্বাপনের জন্য পানি সরবরাহের একমাত্র প্রধান উৎস হিসেবে মূখ্য ভূমিকা পালন করবে। বাবুরাইল খালটি সংরক্ষণ ও সংস্কারের মাধ্যমে নগরবাসীর একঘেয়েমি জীবন যাপন পরিবর্তন ও প্রাণোজ্জ্বল করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
উল্লেখ্য যে, প্রকল্পটি UN Habitat কর্তৃক Asian Townscape Jury Award 2016 এবং UNDP কর্তৃক আয়োজিত Smart City Innovation Award 2017 অর্জন করে।
১ |
মোট দৈর্ঘ্য |
: |
২৮০৪ মিটার (প্রায় ৩ কি:মি:) |
২ |
প্যাকেজ সংখ্যা |
: |
১০ (দশ) টি |
৩ |
মোট রাস্তা |
: |
২.০৫ কি:মি: এবং প্রস্থ ২৩ ফুট |
৪ |
আরসিসি বক্স ড্রেন |
: |
৫.৫৭ কি:মি: |
৫ |
ফুটপাথ |
: |
৬.৫ ফুট প্রস্থ (উত্তর) এবং ১০ফুট প্রস্থ (দক্ষিণ) |
৬ |
আরসিসি গার্ডার ও স্লাব ব্রীজ |
: |
১১ (দশ)টি |
৭ |
মেটাল ফুট ব্রীজ |
: |
০৫ (পাঁচ) টি |
৮ |
আরসিসি ভিউং ডেক |
: |
০৩ (তিন)টি |
৯ |
আরসিসি ঘাটলা |
: |
০১ (এক) টি |
১০ |
প্রাক্কলিত মূল্য |
: |
১৯০,৫১,০১,২০৯.০০ |
১১ |
মোট চুক্তিমূল্য |
: |
১৯৪,৭৮,৯৯,১৪১.০০ |
১২ |
অর্থায়নে |
: |
বিশ্বব্যাংক |
১৩ |
কাজ শুরুর তারিখ |
: |
১৯-০৭-২০১৮ |
১৪ |
কাজ সমাপ্তির তারিখ |
: |
৩০-০৫-২০২১ |
পূরণকৃত নমুনা ফরমঃ